MyFreeLife: ক্লিকার থেকে ওডেস্কার

আমি ইফতেখার হোসেন প্রীতম।
কি কর?
একজন ছাত্র
কিসে পড়?
এবারের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী
কি ?? পরিক্ষার্থী! তোমার তো বয়স এখন খেলাধুলা করার, ফ্রীল্যান্সিং-এ কি?
ফ্রীল্যান্সিং-ই তো আমার কাছে অনেক মজার লাগে।
Priyo Logo

ঘড়ে কম্পিউটার আসে ২০০৪ সালে; কিন্তু নেট-এর সাথে যুক্ত হয়েছি ২০০৮ সালে।
নেট আর কি? ভাই একদিন একটা ফেসবুক আইডি খুলল আর দেখালো। আমার আগ্রহ হলো। আমাকেও করে দিতে হবে, না দিলে অবস্থা খারাপ করে ফেলব :P
তাই ভাই ও বাধ্য হয়ে একটা মেইল আইডি খুলে একটা ফেসবুক করে দিল। সারাদিন শুধু মেয়ে আইডি খুজতাম আর রিকয়েস্ট দিতাম।

২০১১ সাল পর্যন্ত এভাবেই গেলো ।
তখন জিপির এক জিবি নেট দিয়ে আমি, ভাইয়া, আপু সারা মাস চালাতাম। গান ডাউনলোড, শুনা আর গেমস খেলা ছাড়া কিছু পারতাম না। এমন কি জিপ ফাইল খুলতেও পারতাম না।

তারপর আমার প্রতিবেশী এক বড় ভাইয়া মিডস আইটি ডেভেলপমেন্ট-এর কথা বললেন। সেখানকার বাইনারি সিস্টেম-এর কোনো কিছুই জানতাম না। আমাকে বলা হয়েছিলো গ্রাফিক্স ডিজাইনিং কোর্স-এর কথা।
তো অনেক বায়না ধরে কোর্সটা করলাম। ওই ভাই-এর আসল উদ্দ্যেশ্য ছিলো আমাকে রেফার করা। কিন্তু উনার এই মতলবের ভিতর আমার অনেক উপকার লুকায়িত ছিল ।

আমি কোর্সটা করলাম। চিন্তা করলাম সাপ্তাহে ২০ ডলার আয় করলে মন্দ কি? সারাদিন পরে থাকতাম। দেখলাম আমার দ্বারা সম্ভব নয়। এরই মধ্যে আমার ঘরের উপর দিয়ে একটা সুনামি চলে গেলো, যার ফলে আমার ঘরের ২.৫ লাখ টাকা ধুলিস্যাৎ, জ্বি হ্যা।

এর কারন হলো স্পিক এশিয়া অনলাইন নামক একটি সার্ভে কোম্পানি। আমার আব্বু একজন উকিল। আরেক উকিলের কথায় পরে একে একে ১৯ কি ২০ টা অ্যাকাউন্ট খুলে ফেললেন :( প্রতিটির পিছনে ২০০ ডলার করে ব্যায়। শেষে যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে, কম্পানিও চম্পট হয়ে গেলো। এর মাঝখানে অনেক বাংলা ব্লগ পরে জানলাম এগুলো সব ধোকাবাজি। যখনই ঘরে বললাম আমারে বকা শুরু, ক্যান ??
তার কয় এত টাকা নিছে, পালাবে কই??
আমি কি কমু ? ছোট বাবাজি বলে চুপ ।

কিন্তু এত দিনে জেনে গেলাম ফ্রীল্যান্সং কি?
কাজ করা ছাড়া আমাকে টাকা দিবে ক্যান? টাকা কি গাছে ধরে?
তাই খুললাম ওডেস্কে একটা একাউন্ট। কিন্তু কাজ না জানলে কিভাবে কাজ পাব?
তাই বলি আগে কাজ শিখি। টিউটোরিয়াল বিডীতে আমার শেখা গ্রাফিক্সের টিউটোরিয়াল লিখে একটা ডোমেইন পেলাম। সেই সাথে এক বন্ধুকে বলে হোস্টিং ও নিলাম। ইচ্ছা ছিলো এডসেন্স পাবলিশার হব। কিন্তু ভিজিটর না থাকলে চেক আসমান থেকে আসবে ??

তাই বললাম শুরু থেকে শিখি। বাংলা ব্লগ ঘেটে ঘেটে শিখলাম ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপিং। এ কাজে আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন এম জে জিন্নাত নামের একজন সফল ফ্রীল্যান্সার ভাইয়া।

বানালাম ব্লগ। পোস্ট ও দিলাম অনেক। দিলাম এডসেন্সে এপ্লাই। পরে দেখি গুগল অ, আ পারে না। তাই মন বইসা গেলো। তবে ঠিক করেছি, পরীক্ষা শেষে ব্লগিং করব ।
এরই মাঝে ওডেস্কে বিড করতে লাগলাম। কিন্তু হায়, কাজ তো পাই না, কি করব ? পরে চিন্তা করলাম, আমারে ক্যান লোকে কাজ দিবে? ? আমি তো চোরাই কভার লেটার ইউজ করি :P
এখন বড় জোর ৩ লাইনে কভার লেটার লেখা স্টার্ট করলাম, লাভ নাই কিছু হচ্ছে না।

চলে গেল ৪ মাস । জিন্নাত ভাইরেও বলি ভাই কাজ পাই না ক্যান ?? ভাই বলে পাবে :D
পেয়ে গেলাম । ৩০০ ডলারের কাজ।
কি? শুরুতেই ৩০০ ডলার ?? না ঘাপলা আছে ।।
হ্যা , ঘাপলা সব ঘাপলা। কাজ ছিলো বিলিং সিস্টেম এর। কিন্তু ফুল ইনফরমেশান দিচ্ছিলো না। যখনই দিতে বলি, তখনই বকা দেওয়া শুরু। দিলাম বাদ কইরা ।

এখন কি ?? আবার বিডিং, আবার এপলিকেশান ডিজাইন ।

একটা জব দেখলাম ১৬ ঘন্টা আগের , কিন্তু কোন বিড নাই :O :O
কিন্তু কাজটা আমার পক্ষে সহজ ছিলো। জাস্ট ওয়ার্ডপ্রেস সেটাপ ।
দিলাম এপ্লাই, কভার-এ দেখালাম স্যামপল ।
দিলো ইন্টাভিউতে ডাক :)

ইয়াহু ঝাকানাকা। কাজও দিয়ে দিল ১৫ ডলার এর কাজ যদিও। কিন্তু প্রথম কাজ। ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ দিয়েই বায়ারকে বলি হয়েছে স্যার। তারাতারি কাজ দেখে সে ও খুশি। ১৫ দলার এর জায়গায় দিল ২০ ডলার ।

সাথে আরো দুইটা কাজের অফার- প্রায় ২০০ ডলার এর। বায়ার এখনো আছে আমার সাথে, মাঝে মাঝে অফার করে। কাজ করি।

এর মাঝে কিছু গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর কাজও করেছে।
সর্বশেষ আমার ভাইকে দেখালাম সব। বললাম দেখ তুই ২।৫ লাখ দিয়ে কি পাইছস ?? আর আমি না দিয়ে কি পাইছি ??

ভাই ও বুঝে গেলো, আসলে ক্লিক সার্ভে বলে কিছু নেই , সব ধোকা ।

তাই সে ও কাজ শিখা স্টার্ট করছে ।

পরিশেষে দিচ্ছি এস.এস.সি এক্সাম :)

আপনাদের দোয়া একান্ত কামনা করি :) আশা করি সবার দোয়া পাব :)

ধন্যবাদ সবাইকে । বিস্তারিতঃ http://tech.priyo.com/blog/2013/02/06/8299.html

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.